অভিমানী মৌনতার কাঁটা
সময়ের ডানায় উড়ছো?ওড়ো...অভিমানী
মৌনতার কাঁটা খচখচ ফুটে গেলে অনুভূতির
জালি পা’য়, প্রেমের প্রজাপতি মনের দরোজায়
পাখনায় কড়া নাড়ে...
দু-হাত বাড়িয়ে স্বাগত জানালে, নরকের আগুনও
মনে হয় কুসুমগরম জল; কথার সাগরে অবাঞ্ছিত
জোয়ার এলে, ভেসে যাবার ভয় থাকে—ঢেউগুলো
দ্রুতগামী সাপ যেন; সৈকতে মঞ্চস্থ
হয় তখন ফেলে-আসা জীবনের অসমাপ্ত নাটকের
শেষদৃশ্য—আর তুমি একলা দর্শক দাঁতে নখ
কাটছো; মাথার পেছনে চোখ
লাগিয়ে পালিয়ে গিয়ে কোকিল-ডাকা বাগানে
হারানো দিনের ফালি ফালি প্রথম রোদের
উত্তাপে ভিজতে চাইবে—কিন্তু, নড়তে গিয়ে
দেখবে, জেলের জালে জড়িয়ে আছো
বাজেয়াপ্ত হৃদয়
চোখগুলো কালসাপের ডিম
গাছ দেখি—সবুজ পাতা দেখি না
পাতাগুলো মৃত্যুর চিঠি...
বাসুকিনি, আর কতো টানাটানি!
অমরত্বের লড়াইটা থামাও,মৃত্যুর চিঠি
ঝরে পড়ে, উড়ে আসুক...বারুণী, চুপ কেন?
অমৃতের ঢেউয়ে রত্ন ভাসে—আলো দেখি না...
ভাগ-বাটোয়ারার উৎসবে বাজেয়াপ্ত
হৃদয়ের ইতিহাসের পাতা
ফরফর উড়তে দেখি—কল্পতরু দেখি না...
মৃত্যুর চিঠি দেখি—মৃত্যু দেখি না...
রক্তমাখা মরুভূমি হাসে, ঘোড়ার খুরের
গর্ত চেয়ে থাকে, নোনা জলের ঢলে
বীরত্বের গৌরবগাঁথা ভেসে যায়...
আদিম শক্তি
কড়া-পড়া হাতের তালুতে সার্জিকাল মাস্ক পরে
পিরামিডের ছায়া ঘুমোয়; সুডোল শরীর থেকে টপটপ
পড়তে- থাকা নদী-রঙা ঘামের ফোঁটায়
মিশে আছে আদিম শক্তি; মৃত্যুর চেয়ে গভীর
ঘুম থেকে জেগে, ভোরের আলো
উপচে-পড়া তোমার চোখ পাহারা দেয়
নতুন দিনের ঐশ্বর্যের গোলা; ধু-ধু প্রান্তর সবুজ রঙে
রাঙিয়ে, বাজের চাবুক হাতে, দাবড়িয়ে বেড়াও
সভ্যতার ধকল-নাকাল সৈনিকের থার্মাল স্ক্যানারে
জ্বর মেপে-নেয়া কাবু ঘোড়ার পাল; আর তোমার
খোঁপার ছায়ায় ম্লান হয়ে যায় ফ্লাডলাইটের
আলো, কুলোর বাতাসে ফেঁসোর মতো উড়ে যায়
সাইক্লোনের ধুমো-ওড়া চোখ; অথচ চোখে তোমার
মায়ার সাগরের ঢেউ আর জোছনার জল, আঁচলে নির্ভয়ে
মুখ মুছে নেয় নীলিমা থেকে ছোঁ মেরে
মুঠো মুঠো নীল পেড়ে এনে, উঠোনে উড়িয়ে-দেয়া
অলংকরণঃ আশিকুর রহমান প্লাবন