কাচের গেলাসের তিন বন্ধু
একটি কাচের গেলাস- উপচানো শূন্যতায় নিজেকে
বেশ খাপ খেয়ে নিয়েছিল
তারও কিছু বন্ধু হল-
ঝড়ো বাতাস, বাতাবি লেবু আর ঝিঁঝি পোকা।
একদিন তারা বেড়াতে গেল সবুজ উদ্যানে
যখন ঝড় উঠল, ঝড়ো বাতাস চলে গেল তার সাথে,
আর বৃষ্টির পর বাতাবি লেবু ছড়াতে থাকল সৌরভ
ঝিঁঝিও মেতে গেল তুমুল ব্যস্ততায়,
উদ্যান থেকে একাই ফিরল কাচের গেলাস, খুঁড়িয়ে।
দর্জি-ঘর
নতুন পোষাকগুলো বেশ ঝুলছে এখন আয়েশে,
মাথার ওপর।
একটু আগেও সেগুলো ছিল
কেটে রাখা কাপড়ের স্তুপ।
কাঁচির নিচে এলোমেলো টুকরোগুলো
পরিপাটি হয়ে আয়নায় নিজেকে
যখন বারবার দেখছিল ঘুরে ফিরে
তার এই নতুন কিছু একটা হয়ে ওঠাকেও
ঠেকাতে পারেনি কোন দর্জি।
বায়োস্কোপ
উড়ছে, চিরচেনা মাঠ বিদীর্ণ শরীরে, উড়ছে
পাশাপাশি, যেমন খুশি উড়ছে, বনজ পাতা
হাত দিয়ে ছুঁয়ে দিচ্ছে অধরা আকাশ, মেঘ-বাহু, কোমলতা
একচিলতে খাল, তার জল উঠে এসেছে ওপরে
স্কুলঘরের পেছনে চিরকাল দাঁড়িয়ে রইল যে লাজুক
জারুল ঝোপ- সেও উঠে এসেছে ডানায়
পার হয়ে গেছে সবগুলো প্রাচীর, সন্ধানী দ্রোন,
ফেলে এসেছে পেছনে, বহুদূরে
পাওনা চুকানো খেরোখাতা- দড়িছেড়া ঘোড়ার মতো উড়ছে,
প্রবল কুয়াশা ঘেরা পাথুরে নদীও উড়ছে শক্ত ডানায়
নৈর্ঋতে জমছে ভারী ঝড়ো হাওয়া
নিচে গ্যালারিতে বসে নিরাসক্ত মানুষগুলো নিভুনিভু আলোয়
সরুচোখে দেখছে এক উড়ুক্কু পৃথিবী
অলংকরণঃ তাইফ আদনান