জলধি / কবিতা / স্বপন শর্মার তিনটি কবিতা
Share:
স্বপন শর্মার তিনটি কবিতা
শব্দের দাক্ষিণ্য পেয়ে

 

শব্দেরা উড়ে  যেন পরি

ধরার চেষ্টায় ওত পেতে থাকি

ধরা পড়লেই শুরু করি ওদের বিয়ের আয়োজন ।

                            

অন্তরের ওমে রাখি বলেই 

ওরা ডানা গুটিয়ে বশ্য হয়

চরাচরে বড্ড শীতের আবহ

এর মধ্যে ওদের একটির সঙ্গে আরেকটির

সঙ্গম ঘটালে  সমস্ত শৈত্য পালায়  ।

 

মিলনের আয়োজনে দেখি

ওদের শরীরে আলো ।

আমার ঘরে তখন মেঘমল্লারের সুর বেজে ওঠে

সেই  সুরে আমার অন্য আমির জন্ম। 


দেখা সিরিজের কবিতা -- ১০

 

সমুদ্র তীরের বালি ফিসফিস বলে      

তোমার আলোকপ্রাপ্তির শুরু এখানেই, শেষও   

শুরু ও শেষের মাঝখানে এক ব্যর্থ সম্ভাবনা  

একটি অনুভবী পথকে কাঁদায় ও কাঁদে।    

 

তীরের কলরব থেকে দূরে   

আজও সেই সম্ভাবনা পথকে পীড়া দেয়   

ধুলোময় বুকে তার অসীম পিপাসা   

 

সে পিপাসার আগুনে পোড়ে  কৃষিমন ,

ফসলের স্বপ্ন , যুবক সময়, বসন্তের সৌধ

আর এই ফাঁকে

সে পথ  ধ্বনির দরজার কাছে পৌঁছে যায়       

 

তীরের ঢেউয়ের শব্দের মধ্যে  

দুটি কচি প্রতিশ্রুতির শব্দহীন ধ্বনি   

আজও শোনা যায়  

আজ মধ্যবয়সি সময় দেখে সম্ভাবনাহীন সম্ভাবনা

নিরালাকে ঘ্রাণময় করে । 

জানি, শূন্যের ভারে ভারাক্রান্ত সম্ভাবনা দেখবে একদিন       

এই  বিনিদ্র অক্ষরগুলোতে লেখা তাঁরই ধ্বনিময়  বিভূতি  


নাবিকের জন্য সনেট

 

কালের সীমার মধ্যে এক চিরকাল,

অচেনা স্পৃহায় তার চলা বহু দূর

পরবাসে নিঃস্ব তার সন্ধে বা সকাল  

অচেনা স্রোতেই মেলে অচেনার সুর ।

 

জলপথে মোকাবিলা হাঙরের হানা

সহগামী নাবিকের বৈরী খলখল   

সংবেদি সে চিরকাল চেয়েছে অজানা

অসেতুসম্ভবে শুধু গড়িয়েছে জল ।

 

 নিশ্চিতকে ছেড়ে তার যাত্রা অনিশ্চয়

 হরেক বন্দরে প্রাপ্তি নতুনের ডাক

 মানুষের কলরোলে বর্ণিল বিস্ময় 

 নাবিকের শোনা ইচ্ছে অনন্তের হাঁক ।

 

 স্রোতের বিরুদ্ধে সঙ্গী পোয়াতি সময় 

 জলপথে নাবিকের  ইচ্ছে শুধু জয় ।



অলংকরণঃ তাইফ আদনান