শব্দের দাক্ষিণ্য পেয়ে
শব্দেরা উড়ে যেন পরি
ধরার চেষ্টায় ওত পেতে থাকি
ধরা পড়লেই শুরু করি ওদের বিয়ের আয়োজন ।
অন্তরের ওমে রাখি বলেই
ওরা ডানা গুটিয়ে বশ্য হয়
চরাচরে বড্ড শীতের আবহ
এর মধ্যে ওদের একটির সঙ্গে আরেকটির
সঙ্গম ঘটালে সমস্ত শৈত্য পালায় ।
মিলনের আয়োজনে দেখি
ওদের শরীরে আলো ।
আমার ঘরে তখন মেঘমল্লারের সুর বেজে ওঠে
সেই সুরে আমার অন্য আমির জন্ম।
দেখা সিরিজের কবিতা -- ১০
সমুদ্র তীরের বালি ফিসফিস বলে
তোমার আলোকপ্রাপ্তির শুরু এখানেই, শেষও ।
শুরু ও শেষের মাঝখানে এক ব্যর্থ সম্ভাবনা
একটি অনুভবী পথকে কাঁদায় ও কাঁদে।
তীরের কলরব থেকে দূরে
আজও সেই সম্ভাবনা পথকে পীড়া দেয়
ধুলোময় বুকে তার অসীম পিপাসা ।
সে পিপাসার আগুনে পোড়ে কৃষিমন ,
ফসলের স্বপ্ন , যুবক সময়, বসন্তের সৌধ
আর এই ফাঁকে
সে পথ ধ্বনির দরজার কাছে পৌঁছে যায়।
তীরের ঢেউয়ের শব্দের মধ্যে
দুটি কচি প্রতিশ্রুতির শব্দহীন ধ্বনি
আজও শোনা যায় ।
আজ মধ্যবয়সি সময় দেখে সম্ভাবনাহীন সম্ভাবনা
নিরালাকে ঘ্রাণময় করে ।
জানি, শূন্যের ভারে ভারাক্রান্ত সম্ভাবনা দেখবে একদিন
এই বিনিদ্র অক্ষরগুলোতে লেখা তাঁরই ধ্বনিময় বিভূতি ।
নাবিকের জন্য সনেট
কালের সীমার মধ্যে এক চিরকাল,
অচেনা স্পৃহায় তার চলা বহু দূর
পরবাসে নিঃস্ব তার সন্ধে বা সকাল
অচেনা স্রোতেই মেলে অচেনার সুর ।
জলপথে মোকাবিলা হাঙরের হানা
সহগামী নাবিকের বৈরী খলখল
সংবেদি সে চিরকাল চেয়েছে অজানা
অসেতুসম্ভবে শুধু গড়িয়েছে জল ।
নিশ্চিতকে ছেড়ে তার যাত্রা অনিশ্চয়
হরেক বন্দরে প্রাপ্তি নতুনের ডাক
মানুষের কলরোলে বর্ণিল বিস্ময়
নাবিকের শোনা ইচ্ছে অনন্তের হাঁক ।
স্রোতের বিরুদ্ধে সঙ্গী পোয়াতি সময়
জলপথে নাবিকের ইচ্ছে শুধু জয় ।
অলংকরণঃ তাইফ আদনান