বিবর্ণ লেখচিত্র
আমার মৃত্যুর পর
দীর্ঘ নিরবতা ভেঙে পূর্ণতোয়ার জলে অশ্রু প্লাবিত হবে মোর
নিঃশ্বাস মিশবে বাতাসে, দেহ হবে বিলীন ধূসর ছাই
আমার মৃত্যুর পর, দেহ থেকে ভেসে আসা কাতর কণ্ঠ হোক,
কিংবা ভিড়ে মিশে থাকা আমার পায়ের শব্দ
সবই কেমন অচেনা লাগবে, যেনো কিছুই নেই আর
ছড়ানো ছিটানো কিছু ফুলের মালা ফেলে
আচমকা ত্যাগের আবেশে অন্ধকার হব আমি
নীরবে একাকী গার্হস্থ্য জ্বলে উঠবে প্রকাণ্ড কাঠ,
আমার মৃত্যুর পর তোমার উঠোনে ভিড় করবেনা আমার অহেতুক কথারা
যা ছিল এক ঝড়ে হারাবে তুমি সব,
শৈশব থেকে যৌবন এর সেই রৌদ্রতপ্ত বসন্ত
দুপুরের ঘাম শুকিয়ে জীবনের অনেক কষ্টে পাওয়া কিছু স্মরণীয় দিন
ফাগুনের রঙে বয়ে আসা স্বর্ণালী মরসুম, সবাই বদলে যাবে হটাত করেই
আমার মৃত্যুর পর যতটা দূরত্ব ছিল তোমার আমার মধ্যে
ঘুচবে তার অনেকটাই, তোমাতে মিশব আমি
সশরীরে না থাকার কারনে বুকের মাঝে যেই জায়গাটা রেখেছিলে,
ভুলে যেও না
আজ থেকে মৃত্যুর হাজার বছর পর,
যতটা দূর স্বপ্ন দেখেছিলেম সেই সবটুকু নিয়ে পাড়ি দেব মোরা
এক স্নিগ্ধ মৃত্যুর পর তোমাকে আরো গভীর ভাবে দেখব।
সমভূমি
আমার স্পষ্ট মুখচ্ছবি দেওয়ালের কার্নিশে লেপ্টে,
তুমি কি চাইছো আন্দাজ না করতে পারা আমার ভাবুক মন
সেই থেকে নির্লজ্জতার কুড়ে ঘরে বসবাস করে,
হয়তো একটিবার দেখতে এসে ছিলে আমায়
আমার বিবর্ণ চেহারা হয়তো মায়া কেড়েছিল তোমার,
আমার স্বপ্নকে তুমি কখনোই পূর্ণাঙ্গ মর্যাদায় দেখতে চাইতে না
অবসর সময়ে চাইতে না আমার প্রিয় একটি গান
আমার দেহের গোটা সমভূমি জুড়ে ভালবাসার একটা পাহাড় গড়ে তোলার পর,
শিশির ভেজা ঘাসে শরতের উষ্ণতা মিশে সেই যে বসন্ত এলো
তারপর কত চন্দ্রভূক অমাবস্যা শেষ গেলো,
তবুও শহরের কোলাহলে তোমার নিমিত্ত চিত্তর দেখা নেই
কখনো শোনা হয়নি ঠিক কী চাইতে আমার থেকে
নিঃস্বার্থ সম্পর্কে কোন জিনিসটা পার্থিব ভাবে মিলেছিল তোমার জীবনে?,
হঠাৎ আমার দীনদশায় তোমার এই বিয়োগ কোন বদলার প্রকাশ?
দীর্ঘ দশ বছর ধরে মনের ভেতরে ফুঁসছে এসব আন্তর্জালিক বিরহ,
সমস্ত ভাবাবেগ সময় খোজে বাষ্পমোচনের
উবে যাবার দিক খুঁজে বেড়ায় সীমাহীন প্রান্তরে,
দূর থেকে অতি দূর যেখানে জনমানব শূন্য একটা দ্বীপ বিদ্যমান।
অলংকরণঃ আশিকুর রহমান প্লাবন