জলধি / কবিতা / সুশান্ত হালদারের তিনটি কবিতা
Share:
সুশান্ত হালদারের তিনটি কবিতা
আর কত পুড়বে দেশ 
দহনে আর কত পুড়বে দেশ 
মানুষ পোড়ে না বলে 
বেড়ে ওঠে ক্লেদ, হিংসার রেশ 
জিঘাংসার ছায়াতলে জনতার সমাবেশ 
 
এখানে ষোড়শী যাতনায় কেঁদে ওঠে 'বাংলাদেশ' 
তুমি তো আছ বেশ চর্ব্য চোষ্য লেহনে 
আমি তো ভাই সেই পথে ধাই 
আমার বলে পিপাসার পেয় কিছু নাই 
 
খাঁখাঁ মাঠ, মরা গাঙ 
প্রজননে বিদ্ধ রাষ্ট্রের শবাধার 
তবুও বলি
নক্ষত্র সমাগমে জেগে ওঠবে দেশ 
ভূ-প্রকৃতির ঋতুস্রাবে আমারই 'বাংলাদেশ'!

প্রকৃতির প্রতিশোধ 
ধরুন 
ঢাকার তাপমাত্রা বেড়ে এক শ' ডিগ্রী সেলসিয়াস হলো 
বাহাত্তর ঘন্টার রেড এলার্ট জারিতে 
শুধু আপনিই দেখতে পেলেন 
প্রথম ঘন্টায় সোয়া দুই কোটি পাখি মরে গেল
পিচঢালা পথ ছয় ঘন্টায় দাউদাউ করে জ্বলে উঠলো 
পরবর্তী ঘন্টায় 
বুড়িগঙ্গার জল বাষ্পীভূত হয়ে উড়ে গেল
 
তিন দিন পর দেখতে পেলেন 
সব গাছ পুড়ে গেছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে 
বিল্ডিং থেকে চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে গলিত দেহ 
এমতাবস্থায় 
জ্ঞান ফিরে সাত দিন প'র দেখতে পেলেন 
ভয়াবহ অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে শুধু আপনিই........ 
চিকেন ফ্রাই আর তন্দুর নিয়ে বসে আছেন ! 

অধিকার 
সমস্ত ক্লেদ ছাপিয়ে যদি বৈশাখ আসে
যদি চৈত্রের ঝড়ে ধুলি ওড়া সন্ধ্যা নেমে না আসে 
তবে তুমিই হবে আমার
পূর্ব বাংলার উনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান 
 
যদি ব্যঞ্জনায়-ভরা মা আমার 
স্বরবর্ণে লিখে যায় চর্যাপদের ভুসূকুপার কবিতা 
যদি জসীমউদ্দীনের স্মরণসভায় 
বিমূর্ত হয়ে ওঠে বনলতার জীবনানন্দ দাশ 
তবে তুমিই হবে 
নজরুল বিদ্রোহে প্রভাত ফেরীর উত্তরাধিকার 
 
লাল লাল নীল নীল পাখি যদি আকাশ ছেড়ে ওড়ে যায় 
যদি গীতাঞ্জলি ভোর
ব্যাকুলতায় ভরে ওঠে রবীন্দ্রময় কাদম্বরী ভাবনায় 
তবে তুমিই হবে উত্তর সীমান্তে
মরণ চিৎকারে ফিলিস্তিন শিশুর স্বাধীনতার অধিকার !


অলংকরণঃ তাইফ আদনান