জলধি / কবিতা / সুদেষ্ণা গঙ্গোপাধ্যায়ের তিনটি কবিতা
Share:
সুদেষ্ণা গঙ্গোপাধ্যায়ের তিনটি কবিতা
 ব্যথা যত গুলিয়ে ওঠে

কতবার দেখেছি সুরঙ্গ থেকে উঠে আসছ

 

প্রতিবার হাত বদলে গেছে ঋতু অনুযায়ী

 

সারা সন্ধ্যে খোসা সুদ্ধ আলু ভাজার গন্ধে

রাত গড়িয়েছে। সুসিদ্ধ হয়ে উঠেছে অবিশ্বাস

#

আপাদমস্তক জল যাপন প্রথম শ্রাবণের নিয়ম

এক গা জ্বর নিয়ে হেঁটে যাই নদী অভিমুখে

দিন গত পাপ ক্ষয় আমাকে ক্ষমা করেনি কোনদিন

ঘোর কেটে আবিষ্কার করি শ্মশানবাসীর ঘরকন্না

#

এসবই অহেতুক, অপ্রয়োজনীয় কথন

বিকেল হলে মূল্যহীন বয়ে যায় বাসি ফুল

আমিও তোল্পি তল্পা গুছিয়ে তল্লাশি চালাই

মাটি ভিজিয়ে খুঁড়ে ফেলি নতুন সুরঙ্গ


সাপ লুডো

অনেক সময় মনে হয় হতে পারতাম রাজনীতির ময়দানে পোড় খাওয়া বাঘ

 

নন্দন কাননে  দাঁত, নখ খুইয়ে হেরো নাম চাইনি মোটে

 

কাজিরাঙ্গার গোঁয়ার গণ্ডার বরাবর আমাকে ইমপ্রেস করে

এসবে মন উঠে গেলে ম্যাকাও, ঠিক কোন দেশের জানা নেই

মেকি যা কিছু সব ঠুকরে কর্কশ স্বরে খুল্লাম খুল্লা বলে দিতাম

কার কত দূর্গন্ধময় অতীত লুকানো আছে কোন মর্গে

#

এসব বিদ্রোহের ভাবনা মনে হল বুঝি! সেসব কিছুনা

কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি খেলা সেই কোন শৈশবে

পুকুরে ঝাঁপাই জুড়ে খেলেছি, কলমি তুলে এনে

কাঠ জ্বালে ভাত ফোটার গন্ধে মিশিয়ে, গোগ্রাসের আরাম

আজ কাজ হীন বৃষ্টি দিন, জলছবি দেখে

চলো এক হাত সাপ লুডো খেলি

শেষের ঘরে কে কতবার ওঠা নামা করল হিসেব করি।


নিজের একটি ছুটি
রাত যত বেড়েছে চুঁইয়ে পড়েছে অমায়িক চাঁদ, কোন বাছবিচার করেনি

তুমি ক্লান্ত বসে এক এক নামের ভুল চুক খুঁজে কথা ভাসিয়েছ খাদে

জানো কি খাদ সমস্ত গিলে নেয়, পাহাড়ি দেয়াল অথবা সমুদ্রের মতো উদার নয়

ফিরিয়ে দেয় না সবটুকু। বার বার একই ভুল করে চলেছ

#

এঁদো গলির মধ্যে যত বড় করেই ডিসেম্বর আসুক, পারবে কি ফেরাতে

হিম ডোবা বরফ চূড়া আর শিয়াল ডাকা রাতের স্বপ্ন

ব্যথাতুর চোখ খাটের তলার অন্ধকারে মিশে গিয়ে সাদা প্যাসটেলে ছবি আঁকে

 

কোজাগরী আলোয় দেখা ঝলমলে কাঞ্চনজঙ্ঘা আর জোনাকি



অলংকরণঃ তাইফ আদনান