জলধি
/ কবিতা
/ রিজভী হাসনাতের তিনটি কবিতা
রিজভী হাসনাতের তিনটি কবিতা
নাড়ি
স্থবির সম্পর্ক
শূন্য মফস্বল
রোদ পড়ে গেল
থেমে থেমে আসে ঠান্ডা বাতাস
আকাশে ফিঙেদের দল
সবুজ ঘাসের বিস্তৃর্ণ মাঠের পরে
মহুয়া ফুল ফুটেছে
বালকেরা ফুটবল মাড়িয়ে চক্রাকারে আবর্তিত
কৃষ্ণচূড়া ডাল গুলো একটু একটু করে শূন্যের দিকে হাত বাড়িয়ে চলেছে।
ডালের উপরে নিচে কৃষ্ণচূড়া ফুল
কেমন যেন জীবন নদী
বাঁক নিল নিরবধি
বাতায়নে চোখ রেখে দেখি
একটা বুলবুলি শূন্যে উড়ে
গোটা মফস্বলে মিছিল
সাজ সাজ রব
অলিগলিতে নির্জনতার কলরব
কেউ নেই.....
নাড়ি
চাঁদনী রাত
কচুরিপানায় ভরে গেছে গোটা পুকুর
সুপারির ডালে বাতাস দোলা দেয়
ফুটপাত দিয়ে হেটে চলি
একা একা কথা বলি
বয়ে গেছে আঁকা বাঁকা মেঠোপথ
চারিপাশে ধানের কলি
হঠাৎ হঠাৎ চমকে ওঠে অন্ধকার
কুড়া পক্ষী শূন্যে কুড়ু ডাকে
এখনো বহু পথ বাকী
খাল পেরিয়ে বিঘে দুই জমি
তারপর একটা আল
ছোট্ট একখানা কুড়েঘর,
পাশের শিমুল গাছটি কুড়ি বছর ধরে দাড়িয়ে আছে দিব্যি
ধূলো পড়ে আছে টেবিলটিতে
দেয়াল ভরে গেছে টিকটিকিতে
মা _ বাবার ছবির উপর বাসা বেঁধেছে
মাকড়ের দল
ভয় হয়,আশে পাশে কোন প্রতিবেশী নেই
ছোট্ট কুপিটিতে তেল ফুরিয়ে এল
ছোখ ছল ছল
স্থবির সম্পর্ক
নিঝুম রাত
শুনশান সড়ক
চারিপাশে ঘুম
ল্যামপোস্টের নিচে আলো
ব্যাঙেদের সভা,ছোটাছুটি
পড়ে আছে ধুলি বালি অবহেলিত ইট সুড়কি
পড়ে আছে ঝরা পাতা,শুকনো ডাল
আকাশেতে মেঘ নেই,একটা দুটো তারা
প্যাঁচাদের দেখা নেই,নেই ট্র্যাফিক জ্যাম
ফুটপাতে হকার নেই,নেই হাকডাক
সবকিছু স্থবির
নর্দমার জলে চাঁদের আলো পড়ছে
ধীরলয়ে ভেসে যাচ্ছে সম্পর্ক
সব কিছু, ভুলে যাবার পিছু পিছু,
সেই সব দিন রাত্রি,মৌমাছি,
ভালবাসা মিছি মিছি,কিছু স্মৃতি,কিছু মায়া
সবি ধূসর, সবি আবছায়া
বিল্পব,মিছিল ব্যারিকেড,হৈ-চৈ, রাত ভর যুক্তিতর্ক।
অলংকরণঃ তাইফ আদনান