নদী ও নারী
যুবতী পদ্মা নদী অপরুপা, নতুন রুপে রুপবতী
তখন তার রাগ বাড়ে. অভিমান বাড়ে
বড় বড় ঢেউ, দুই কুলে ছলাৎ ছলাৎ জোয়ারের জল
রাতদিন বিরতিহীন ছুটে চলে সাগরের টানে
উচ্ছল চঞ্চল দূরন্ত যৌবনা নারীর মতো
শরীর ছুঁয়ে দিলে কামনা বাসনা জাগে মনের ভিতর...
নদী আরা নারী সমার্থক
নদী চায় সাগরের সবটুকু মনোযাগ
নারী চায় প্রিয় পুরুষের প্রিয় হতে শতভাগ, খিলাদ, নিখঁত
ডুবে যায় ঘোর লাগা ভালো লাগায়, টান পড়ে লজ্জায়
তবুও নারী চায় নদীর মতো ছুটতে অবিরাম---
অবিকল বহতা নদীর মতো, প্রিয় পুরুষের কাছে...
তারপর কোন একদিন
দিন শেষে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে
কিষন্ন নারীরা ঘরে ফিরে আসে
ভুল মানুষের প্রতি ভুল ভালোবাসার অনুতাপে
অনুশোচনায়, অব্যক্ত কষ্টের আগুনে হৃদয় মন পুড়িয়ে!
নারীরা এমনই
পদ্মা গঙ্গা যমুনা কালিগঙ্গা ধলেশ^রী কর্ণফুলি নদীর মতো
নীরবে কাঁদে, গোপনে, গৃহকোণে, চোখের আড়ালে;
তারপর প্রতি বর্ষায় নদী ভরে যায়
নারীর চোখের জলে,
নদীতে জোয়ার আসে
হৃদয় পোড়ার শব্দ
শব্দ পাচ্ছো?
কান পেতে শোনো
চোখ কান খোলা রাখো;
শব্দ পাচ্ছে?
বিচ্ছেদের শব্দ, ভাঙনের শব্দ,
আপন মানুষ পর হওয়ার শব্দ, খুব কাছাকাছি;
কান্নার শব্দ-- উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিমে
পুরোনো জাহাজ ভাঙার শব্দের মতো ভয়ংকর!
শরীর কাপে সাহসের শূন্যতায়...
মানুষের মন ভাঙার শব্দ, হৃদয় পোড়ার শব্দ
যুদ্ধের শব্দ, বোমার শব্দ, লাখ লাখ মানুষের মৃত্যুর শব্দ!
লন্ডন শহরে পৃথিবীর বিখ্যাত ঘড়ির শব্দের মতো
রোরুদ্যমান মানুষের হৃদকম্পনের শব্দ
গুলিবিদ্ধ গর্ভবতী নারীর জরায়ুর অভ্যন্তরে-
অনাগত শিশুর বেঁচে থাকার অথিকার প্রতিষ্ঠার শব্দ...
শুনতে পাও?
উত্তর চাই, উত্তর; আমার সকল প্রশ্নের সঠিক জবাব চাই।
তোমার কাছে যাবো
তোমার কাছে যাবো
কোনো এক মেঘ রঙ বিকেলে
সন্ধায় সোনালী সুর্য মৃদু হাসবে, আমাকে কাছে ডাকবে
কবিতার ভাষায় বলবে, সেই তুমি এলে, এতো দিন পর!
তোমার কাছে যাবো
কোনো এক পূর্ণিমা রাতে
তোমার বদামী ঠোঁটের মতো পূর্ণ চাঁদ
আমার কানে কানে বলবে,
তোমার আমিকে কিভাবে ভুলে থাকো? পাষাণ পুরুষ!
তোমার কাছে যাবো
মন ভেজাবো পদ্মার স্বচ্ছ জলে
সবুজ বৃক্ষ, রঙিন প্রজাপতি, ঘাসফুল, মায়াবী দুপুর
তোমাকে জানিয়ে দেবে, আমি তোমার শহরে...
অলংকরণঃ তাইফ আদনান