জলধি
/ কবিতা
/ পাভেল আমানের তিনটি কবিতা
পাভেল আমানের তিনটি কবিতা
আমি স্বপ্ন দেখি
আমি স্বপ্ন দেখি এক অখণ্ড মানব সমাজ
ভেদাভেদ বিদ্বেষ অসাম্য দূরে সরিয়ে
ছড়িয়ে দিই মনুষ্যত্বের বাণী
যেখানে সবাই মিলেমিশে একাকার
শুধুই একটি পরিচয়
আমরা শ্রেষ্ঠ গুণের অধিকারী মানুষ।।
আমি স্বপ্ন দেখি এক বিস্তৃত আকাশ
যেখানে স্ব মহিমায় বিরাজিত
সমস্ত হিসেব-নিকেশের খতিয়ান
মুহূর্তের পালাবদলের অভিমুখে
বেড়ে উঠেছে ভালোলাগার চারাগাছ
তাকিয়ে আছি ফুলে ফলের সমারোহে।।
আমি স্বপ্ন দেখি শান্তির ঠিকানা
সম্মানে দিনযাপনের পরিবেশ
প্রাণ খুলে কথা বলার ভাষা
চারিদিকে স্থিতিশীলতার প্রতিচ্ছবি
আনন্দ উদ্বেলিত মননের জাগরণ
খুঁজে পাই সকলের সুখ নিবাস।।
আমি আবারো একটাই স্বপ্ন দেখি
মগ্ন বিভোর মনের আনাচে কানাচে
জমে থাকা লালিত স্মৃতির সরণিতে
চিরভাস্বর মনুষ্যত্বের ঝলকানি
নিমেষে মুছে যাক বৈষম্যের কালিমা
উদয় হোক আবিশ্ব এক নতুন মানবতার সূর্য।।
চেতনার বাতিঘর
চেতনার বাতিঘরে ঘোর তমশা
প্রতীয়মান প্রলম্বিত অস্পষ্টতা
অপলকে ক্রমশ বিলীয়মান
অখন্ড জীবনের স্থিতিশীলতা
তিলে তিলে বিনির্মিত ধারাপাত
অভিমুখ পাল্টে অস্তাচলে
নিঃশব্দের গতিপথে
চলতে চলতে নুড়ি পাথরে পরিণত
মনন আকাশে শুধুই মায়া মেঘ
প্রাত্যহিক ভাবনার পরতে
নিরাশার দীর্ঘ প্রতিচ্ছবি
একে একে অযাচিত প্রস্থান
সৃষ্টি চেতনার যুগপৎ দর্শন
অস্থিরতার আবর্তনে জাগ্রত
জীবন চেতনার ছন্দময়তা
অহর্নিশ সযত্নে লালিত বাতিঘরের সৃজন।
প্রত্যাশার বরাভয়ে প্রহর গুনছি
সেই কাঙ্খিত জিয়ন কাঠির।
অখন্ড মনুষ্যত্ব
নিরবধি চাওয়া-পাওয়ার দ্বান্দ্বিকতায়
আকীর্ণ দেহ-মন-প্রাণ
সরলতায় ক্রমশ খুঁজতে আছি
বহুকাঙ্খিত সমাধানের অভিমুখ
চলিষ্ণু সমাজের আনাচে কানাচে
শুধুই স্বার্থের জটিলতা , অস্থিরতা
সবেতেই একমুখী ভাবনা
মনুষ্য সত্তায় জমে গেছে
আত্মকেন্দ্রিকতার অযাচিত শ্যাওলা
প্রতিক্ষণে লেজুড় বৃত্তি
বিভাজন বৈষম্যের নিদারুণ উপস্থিতি
চক্ষু নিমেষে বেড়ে উঠেছে বিষবৃক্ষ
মনুষ্যত্বের চিরায়ত খোলস ত্যাগে
মানুষ যেন মানুষের প্রতিপক্ষ
এককথায় শ্রেণী শত্রুতে পরিণত
অপূরণ চাহিদার অভিপ্রায়ে
সভ্যতা আজ বড় সংকটময়
ভগ্নপ্রায় মানবতার ইমারত
স্বার্থ লাভের আরাধনায়
তবুও স্বপ্ন দেখি উত্তরণের
একখণ্ড মনুষ্যত্বের প্রতিচ্ছবি।
অলংকরণঃ আশিকুর রহমান প্লাবন