জলধি / কবিতা / নাসিব কামাল আর্দির তিনটি কবিতা
Share:
নাসিব কামাল আর্দির তিনটি কবিতা
অতৃপ্তবোধে ধুকতে থাকা পোকা
বৃষ্টির ছিটে শুকনো কাগজের পাতা কুকড়িয়ে যায়
অতৃপ্তবোধে ধুকতে থাকা পোকার আক্রমণে গাছের পাতা যেমন।
গ্লানি-মেঘ দূরীভূত বর্ষা পর ফসলের মোহ মোহ গন্ধে,
কিঞ্চিত আপাততৃপ্তির নেশায় খেই হারিয়ে ফেলা ফড়িং শুষে নেয় অতিরিক্ত জল,রক্ত।
ঠোঁটের কিনারে বিন্দু রক্ত,মাংস ছিড়ে নেয় মাটি।
বিবেক ফুসে উঠে,'মাটিও রক্ত পছন্দ করে'।
ফসলে ফুলের অবর্তমানে মৌমাছির তৃষ্ণা মেটানোর দায়িত্বে নিহত গাছ,
নিহত বিবেক,নিহত মানুষ। 
ক্ষণজন্ম,তাই শিগগিরি মাটি কাছে ডাকে রক্তের গন্ধ নিতে।

নক্ষত্রগুলোকে মনে হচ্ছে অশ্রু
আকাশের নক্ষত্রগুলো মনে হচ্ছে অশ্রু,
যেকোনো সময়েই ঝরে পরতে পারে।
যেদিন আমি নক্ষত্রগুলোর দিকে চেয়েছিলাম 
অশ্রু আর হৃদয়ের মোকদ্দমা'র শুনানি হয়েছিল।
সেই দিনটায় সূর্য বন্দি ছিলো,
ক্ষাণিক সময়ের জন্য ছাড়া পেলেও আসমান 
অন্ধকার রূপটা দেখিয়েই দিলো।
কি ভয়ানক! কালো আকাশ ছিলো সেদিন,
কবিগুলো একে একে মারা পড়ছিলো,
শব্দগুলো পতঙ্গের মতো আগুনে ঝাপিয়ে মরলো।
আর আমি!সেই মোকদ্দমায় অশ্রু হেরে যাওয়ার
বর্ষনে ভিজলাম- ঝিমিয়ে পড়া হৃদয়ের দ্বারে।
রাতটা ছিলো ভীষণ মোহে ঘেরা,
এরই জন্যে হয়তো আমি বেঁচে ছিলাম।

শৈবালের আস্তরণ পড়ে মনে
দুঃখের চাপা গোঙানিতে ঢাকা পড়ে যায় 
ভুড়ি ভুড়ি হাসির রেখা,ক্ষয় হয়।
শৈবালের বিধানে আস্তরণ পড়ে মনে,
ক্ষয়ের মাঝে জলের কিনারে আঁকিবুঁকি করে
 দূরের কোনো রাঙা পাখি।
শৈল্পিক হাতে তুলির রাঙানো কাগজে বাসা বাঁধে বিষন্নতা,ধূসর বর্ণের 
আলো-আধারের অনটন বুঝে, 
বৃক্ষের অপরিমেয় পরিস্ফুটনে শৈবাল হয়েছে ক্ষয়।
গলিত লাভার মতো ক্ষয়ের বাসনা ভুলে 
ছিটকে আসতে চায় বিধান।
ক্ষাণিক বাসনার মতো পূর্ণতা পেতে
গোঙানি'র শব্দে শৈবাল করে পরিহাস।
মহতের সংজ্ঞা ভূলে রাঙা পাখি থেকে বাঁচতে একটি মাছ করে হাঁসফাঁস। 


অলংকরণঃ আশিকুর রহমান প্লাবন