জলধি
/ কবিতা
/ নাসিব কামাল আর্দির তিনটি কবিতা
নাসিব কামাল আর্দির তিনটি কবিতা
যা কেবল মানুষই পারে
হাঁড়গুলো শুকিয়ে গেছে,
মাটিতে রক্তের দাগ,
বাতাসে মৃত এসিডের গন্ধ।
কারখানার ঠোঁটে হাসি,
পোড়া চামড়ায় তৈরি বাঁশি।
হৃৎপিন্ডের পাশে হিসাবের মেশিন,
ঘুণে খাওয়া মস্তিষ্কে কেবল-
না বলা কর্পোরেট বারণ।
যা কেবল মানুষই পারে।
নিয়নের আলোয় খড়কুটোর জীবন,
পিশাচের তৈরি নিয়মে
পাকস্থলীর শেষ আশ্রয় ডাস্টবিন।
প্রবল মাতৃগর্ভের নিরাপত্তা ফেটে বেরিয়ে আসা সেই পুরুষটি আজ আশ্রয়হীন।
রক্তের প্লাবণে ভেসে যাওয়া ময়দান,
সেখানে আজ খেলছে শিশু,
হাড়গুলো গিয়েছে বাজারে-
কাকগুলো খেয়ে নিয়েছে দেহের অবশিষ্ট,
হৃদয়ের ঘষাতে স্মৃতিগুলো পুঁড়ে ছাই।
যা কেবল মানুষই পারে।
উত্তাল যৌবন পেরিয়ে
পৃথিবীটা এখন যেন গোলাপ সুভাসের আশীর্বাদ।
আপেল গাছের নিচে ভাগ্যের যন্ত্র,
কুঠুরির হারিকেনের আলোয় মঞ্চ,
নিয়তির পরিহাস যেন গোলকধাঁধা,
মাংসপেশি এখন তীক্ষ্ণ কাঁচের মতো স্বচ্ছ।
যা কেবল মানুষই পারে।
বিচ্ছেদ
তোমাকে দেখেছিলাম ল্যাম্পপোস্টের নিচে,
আমাকে দেখে মুখ লুকিয়ে দাঁড়িয়েছিলে।
নক্ষত্রগুলো দেখেছে সবই।
যেমনটা বিচ্ছেদ হয়েছিলো আরেকটা নক্ষত্রের কাছ থেকে,
খসে পড়েছিলো টুকরো হয়ে, হাজারো আলোকবর্ষ দূরে ছুটে গিয়েছিলো।
যদি নক্ষত্রেরও হৃদয় থাকতো,তাহলে দেখতে পেতে
আকাশটা শোকে লাল হয়ে গেছে,যেমনটা হয়েছিলো আমার।
বিচ্ছেদের পর নক্ষত্ররাও আজ আলো হারাচ্ছে,দেখো;
দুরত্বের কাছে হার মেনে নিয়েছে নক্ষত্রগুলো,
যেমন আমিও মেনে নিয়েছিলাম।
মৃত্যুর ঘন্টা
বুকের মধ্যে হাহাকার জমে উঠে,
দেয়ালের স্টিকি নোটগুলো সব চেয়ে আছে।
কামড়াটায় একটা উদ্ভট মোহের গন্ধ,
যে মোহ আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলো বহুকাল আগে।
আজ থেকে শত বছর আগে কিংবা শত বছর পর
মানুষেরা কী এভাবেই মৃত্যুকে বেছে নেবে?
দ্বিধাহীন শব্দগুলো একে একে ডায়েরি থেকে উড়ে চলেছে!
ক্ষাণিকবাদে আমিও নক্ষত্রগুলোর সাথে আড্ডা জমাবো।
অলংকরণঃ আশিকুর রহমান প্লাবন