জলধি / কবিতা / তৌহিদ ইমামের তিনটি কবিতা
Share:
তৌহিদ ইমামের তিনটি কবিতা
পূর্বমেঘ
১.

এখনো নাকে পাই নিমফলের গন্ধ

রোমন্থনের চোরাকুঠুরিতে খুঁজে খুঁজে অন্ধ

হয়ে গেছি সেই কবেই;

উজাড় হয়েছে মাঠ বীজ পড়ে রবেই

ভূতগর্ভে অন্ধকার ফেলে দিয়েছে ঝাপ

যেমন ভুলেছো তুমি প্রথম ঋতুস্রাব!


২.

তোমার চিবুক ছুঁয়ে ছুঁয়ে সূর্য উঠতো

তোমারই দেহ মানচিত্রে আমারপৃথিবী দুলতো

দেহের দেহলি ভেঙে গড়েছি মৈথুনমন্দির

ভাসিয়ে নিয়েছিলো স্রোত প্রমত্ত রতির

জীবন থেকে খুলেছো সেসব যেভাবে খোলো অন্তর্বাস

কী নিপুণ হাতে করে চলেছো সংসারচাষ!


৩.

আমি ব্রাত্যপুরুষ, তুমি কৌমনারী

ধার ধারিনা ফিলোসফির, দেহকাব্য পড়ি

খুলবো দু’জন গায়ের বাকল, হবো আদিম চাড়াল

বৃথা লজ্জা পাচ্ছো তুমি, নেবো পাতার আড়াল

মিলবো দু’জন আষ্টেপৃষ্ঠে কেবল দেহের টানে

যাক ভেসে সব, কী প্রয়োজন সম্বন্ধসূত্র জেনে?


তুমি মারমেইড


লোনা হাতে জড়িয়ে ধরতেই তুমি রেগে উঠলে

ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিলে দূরে

আমার গায়ে নাকি নাবিকের গন্ধ;

অথচ তোমার জন্যই ভাসিয়েছিলাম সমুদ্রে সাম্পান


যে ঢেউরাশি আছড়ে পড়ছে সৌরজগতের বাইরে

তারই শঙ্খচূড়ে ঘুরে এলাম আদিগন্ত মহাজগত

কুড়িয়ে নিয়ে এলাম কিছু নাক্ষত্রিক উপমা

তুমিও চলো সমুদ্রে যাই

জলের স্রোতে জাহাজ ভাসাই

সারেং হয়ে তুলবো আমি বংশীতে সুর

তুমি মারমেইড টেনে নিয়ে যাবে দূর!


ইকারুসস্বভাবে

রোদ ছুঁয়ে তোমায় ছোঁবো

তোমার জন্য উপমা যত আলঙ্কারিক


নদী ও নারীকে সমার্থক করেছিলেন

কোন আদিকবি জানি না

নারীর শরীরজুড়ে ঢেউ

মাটিবর্তী নয় কোনো নারীই

যেন হাঁটে বাতাসে ভর দিয়ে

পাখির মতো ডানা মেলার চঞ্চলতা


আমি অবিরত সীমান্ত দাগাই তোমাকে ঘিরে

চতুর্পার্শ্বে বসাই পাহারা

তবু অহর্নিশ সন্ত্রস্ত থাকি

কবে উড়ে যাও তুমি ইকারুসস্বভাবে!



অলংকরণঃ আশিকুর রহমান প্লাবন