জলধি / কবিতা / তানিয়া ব্যানার্জীর তিনটি কবিতা
Share:
তানিয়া ব্যানার্জীর তিনটি কবিতা
আহ্নিক
এতো বিবর্ণতা কেন ঈশ্বর! 
ঋষি ব্রহ্মা তার ভান্ডার দুহাতে খুলে দিয়েছেন
ঢেলে দিয়েছেন তোমায়,  তোমার নাভি রাজ্যে
সব রঙ,
প্রহরে প্রহরে ওরা ঝড় তোলে  আকাশ সামিয়ানায়। 
আমি চিরকুট জোড়া দিই...  জোড়া দিই 
ওরা গান হবে বলে।
নিজেকেও যে গড়েছি ওই মন্ত্রেই,  তুমি বোঝোনা!
মাইলের পর মাইল চলেছে সন্ধান,
মেলেনি সুত্র,  সংযোগ। 
তুমি ছিলে নিজ সাধনায় আত্ম নিমগ্ন -
আর আমিও আমারি মত।
বেড়েছে ভিড়,  বেলাও... অযথা কোলাহলও
আমি খুঁজে গেছি আজীবন, সেতারে... বেতারে।
এবার যদি পেলাম সাতরঙ তবে কেন!..  হে ঈশ্বর! 
ধুয়ে যাক সব বিবর্নতা... 
তুমি ছু্ঁয়ে দাও আরো একবার আমার অনুচ্চারিত ওম,
তোমার উচ্চারিত সাতরঙ দিয়ে।

জল
সবটুকু উড়িয়ে দিলেও পড়ে থাকে যেটুকু,
তারই নাম ঈশ্বর। 
আমার থাকা আর না থাকা
রোগ কিংবা সংযোগ-
ওই সবেদের গিলে ফেলে জিরোতে গেলেই,
আমার নিয়ত আমি'র ভেতর জ্বলজ্বল করে।
 
মা বাবার মত ' তুমি' ও কেমন অনিবার্য, 
জোর করে ধুয়ে দিলেও থৈ থৈ করো ঘরময়।

চশমা
নিরন্তর ছুঁতে গিয়ে হাত দিগন্তবরাবর,
গতানুগতিক তুমি অদৃশ্য আরেকবার। 
নিরাভরণ আমির হাত পা, চোখ মুখ টুকুই সার,বাকি সবকিছুই অসাড়।
 
তুমি ততক্ষণে পৌঁছে গেছো ঠিকানায়,
কিছু দুঃখবিলাস আর বিলাসীর প্রতি কর্তব্য পালনে।
ওরাও তো আশ্রিতা! তাদেরও কিছু দেয়ার থাকে বৈকি!
 
জলের থেকে স্তর সরিয়ে মেপে নাও যখন ঘড়ির কাঁটা! 
এ দালানের দেয়াল তখন ঠিক রাত বারোটা।
কোথাও মোমবাতিতে ভোর হয়, একটা বেজে,
তো কোথাও খুঁজতে থাকা হাত ফিরে আসে নিজের কাছে...
 
তাতে তোমার কী!
বয়স বাড়লে, ওজনও কমে..


অলংকরণঃ আশিকুর রহমান প্লাবন