জলধি
/ কবিতা
/ জয়দেব চক্রবর্তীর পাঁচটি কবিতা
জয়দেব চক্রবর্তীর পাঁচটি কবিতা
অপূর্ণ সন্ধ্যার কথা
এক
তুমি কারও বন্ধু নও। একা, শুধু একা।
তোমার অনেক দেখা -
না দেখার মতো সন্ধ্যায়
পুড়ে পুড়ে ভস্ম হয়ে আছে
তবু কিছু ফুরোয় না জেনে সেসবের কাছে
গেলে কিছু স্মৃতিজন্ম হয়
বিষাদের খড়িমাটি দিয়ে
এক সময়কে আরেক সময়ের
পরিণাম করে আঁকা যায় অসেতুসম্ভব
ফিরে গিয়ে স্নান করি। রাত্রি জাগে স্তব।
দুই
তুমি যাকে শেষ ভেবেছিলে
তারও শেষ আছে জেনে
শুরু থেকে পুণরায় শেষ করতে গিয়ে -
মধ্যে যে পাথর ছিল,তাকে
সময়ের বুকে ফেলে দিলে
শব্দে যা উঠল বেজে
তা থেকেই আঘাতের ভারী জন্ম হল
এ আঘাত সুদূরপ্রসারী
শেষ হতে গিয়েও যা শেষ হয়নি
তাই যেন বেজে যায় দূরে, ঘন্টাধ্বনি...
তিন
সময় সংঘর্ষপ্রাণ; এছাড়া তার কোনো অস্তিত্ব নেই
সংঘর্ষের মধ্যে যা জন্ম নেয় - তা, বিগত হয়না
বিগত হয়না বলে অনেকেই তার কথা বলে
অনেকে যখন বলে- তুমি তার মুগ্ধ শ্রোতা হও
শুনতে শুনতে কিছু একটাকে
আরেক কিছুর সঙ্গে জুড়ে যেতে দেখে
মনে হয় এই দেখা চূড়ান্ত দর্শন
চার
তোমার তরুণ বন্ধু; তার সঙ্গে তুমি
সন্ধ্যা দেখছ মেডিকেল কলেজের সামনে
এই সন্ধ্যা অন্য কোথাও দেখলে হয়তো
মনেই হতোনা মর্গের লাশের মতো
কেন যে আমার সঙ্গে আজ পর্যন্ত
কোনো সন্ধ্যা তার পরের সন্ধ্যায়ও কথা বলেনি
তা নিয়ে গোপনে আমি যা কিছু বহন করি,যত ভার
সময় হয়নি বুঝি সেকথা বলার?
পাঁচ
পথে যেতে ভাবি আজ পথ যেন মায়াদিঘী যায়
সে বড়ো দিঘীর কাছে
কবেকার শরণার্থী শিবির ভেঙে পড়ে আছে
ভাঙনের কাছে এলে মনে হয়
শুরু থেকে যার সঙ্গে ছিল পরিচয়
সেও ধরে থাকে কিছু অনিবার্য ঋণ
প্রবাসে,দৈবের বশে- এসেছি সেদিন
অলংকরণঃ তাইফ আদনান