জলধি
/ কবিতা
/ ওয়হিদুর রহমান শিপুর তিনটি কবিতা
ওয়হিদুর রহমান শিপুর তিনটি কবিতা
আমি, ঈশ্বর ও শয়তান
আয়নায় দেখলাম আমি বহুগামী এক পুরষ!
চরমপন্থী স্বৈরাচারী এক নারীবিদ্বেষী।
আমার গা ঘেঁষে রয়েছে ঈশ্বর! সেও ....চরম স্তুতিলোভী ।
সেও আমার মতোই স্বৈরাচারী!
আমার কাঁধে লোমশ হাত শয়তানের,
সেও আমার মতোই - সেও প্রভাবশালী স্বৈরাচারী।
আমি, ঈশ্বর এবং শয়তান।
নিতম্বশোভা ভাসছে
ধ্যানস্থ দরবেশের মতো রাত বুকের পাটাতনের ওপর বসেছে
কুয়াসার তববনের ভেতর উজির- নাজিরের নিতম্বসোভা ভাসছে -
উজির নাজিরের সরাইখানা থেকে আসছে মানুষের শরীর পোড়া উৎকট ঘ্রান!
জলধির ওপর হাবিয়া দোজখের মতো জলযান ভাসছে...
কতিপয় ঘোগ বসেছে কান খাড়া শশব্যস্ত তদন্তে!
চেতনার নিগুঢ় লাল বৃত্ত ভাসছে, মদ্যমাংসের ভোজসভা ফাটছে, আবার কারা যেনো কোঁৎ করে গিলে খাচ্ছে মানুষ কাবাব গয়ালগ্রাসে।
নাজিরের বালাখানা থেকে আসছে খরচাপাতি...............
সেইমতো আস্ত জলজ্যান্ত জলযানটাকে ঘিরে আছে কতিপয় সংবাদদাতা হলদেটে গিদড় -
আগুনের হলকার ওপর উড়ছে ঘুড়ির মতো থকথকে হৃৎপিণ্ড!
নিতম্বসোভা ভাসছে, নিতম্বসোভা ভাসছে!
দৃশ্যের ভেতর অন্তর্দৃশ্য
পদ্মা তীরে গনগনে হালাকু খাঁর মতো হিংস্র বাতাস!
জীবনের ভার বইতে না পেরে এই ডাকাতিয়া দুপুরেও বসে আছে এক যুবতী।
বাড়ন্ত শরীরে স্বার্থপর পৃথিবীর ক্ষতক্ষতে দাগ।
বিনোদ বেনীতে ঝুলন্ত একটি নিহত গোলাপ আরবাও আত্মহত্যার জন্য তৈরী!?
একটা হলারলাগা বাইকের শব্দব্রহ্ম; নদীর ওপার দূর দ্বীপগাঁয়ের কলতানের ভেতর শরীরের দরকষাকষির খনখনে শব্দ চাগিয়ে উঠলো।
শতবর্ষী ছাতিম গাছ হতে ছোঁ মেরে হাঁড়িচাটা পাখি নিয়ে গেলো ঘুঘুর ছানা!
নদীর ধাঁধাঁ বাতাসে বাইকের হলারের শব্দ, সেই দরদাম- অশ্রাব্য বচসা---
মা ঘুঘুর আর্তি... সবকিছুই গ্রাস করলো একটি পাথালিয়া ছক্কা ঢেউ!
দৃশ্যের ভেতর অন্তর্দৃশ্য; ঘুঘুর ছানা আর হাঁড়ি চাটা ছাড়া আর কোনো মনুষ্য দেখিনি।
অলংকরণঃ আশিকুর রহমান প্লাবন