জলধি / কবিতা / এম এ ওয়াজেদের তিনটি কবিতা
Share:
এম এ ওয়াজেদের তিনটি কবিতা
স্মৃতিবিলাসের সরল সম্পাদ্য
                 
মানসিক চৌহদ্দির অধ্যুষিত আবাসে 
সতত খেলা করে স্থূল উদরের পরজীবী পরগাছা
ভুলে থাকি চৌদ্দ মাত্রার বাংলা ছন্দ 
উপমার স্থিররেখা রূপকের রেখাচিত্র 
দোলনচাঁপার আত্মজাত সুগন্ধ 
ত্রুটিপূর্ণ বিন্যাসের সহজিয়া দৌরাত্ম্যে 
অঘোষ অল্পপ্রাণ ধ্বনির দ্যোতনা মৃতপ্রায় । 
 
উদ্ধত অশিষ্টতার স্কুটনাঙ্ক বাড়তে থাকে 
বাড়তে থাকে টিকটকারের লাম্পট্যিক এটিমলোজি
শ্লৈষ্মিক ঝিল্লির অশুদ্ধ মিউকাস ছড়িয়ে পড়ে 
হিংসার অঙ্গার প্রসব করে দানবিক টাইগন
শোষণের গুদামঘরে বর্ণসংকর রাসকেল
স্বশাসিত আত্মমগ্নতায় ছিদ্র করে 
বঙ্গীয় বদ্বীপের শান্তিপূর্ণ সার্বভৌম বৃত্ত ।
 
ছদ্দবেশী ভিমরুল বহন করে নষ্টাচারের দূষিত জিন
বিধ্বস্ত শৈবালের শাখাঘাঁটি যক্ষারোগের আশ্রয় কেন্দ্র
দিগন্তবিস্তৃত বোধশূন্য সমতলভূমিতে
বিচরণ করে অদ্ভুত শোভাবর্ধনের হাজারো টিউমার 
টিউলিপের গর্ভকেশর ভরে যায় নষ্টতার স্টিগমায়
অসুখী স্মৃতিবিলাসের সরল সম্পাদ্য 
দখলীয় অভিসারের জলোচ্ছ্বাসে হারিয়ে যায় ।

শুভবোধের বটবৃক্ষটি হারিয়ে গেছে
              
অপুষ্টিকর কল্পনার বৃষ্টির জলে 
রোপন করি মূর্খতার জঞ্জালময় নিষ্প্রভ জিন্দেগি 
অস্তিত্বশীল নাজাতের ইতিবৃত্ত অজানা 
রুদ্ধস্রোত জলপ্রপাতের প্রফেশনাল কপটতা 
কলহপ্রিয় নবজাতকের আজন্ম লালিত সাধনা ।
 
বৃদ্ধ প্রভাতের ধাপ্পাবাজ বকধার্মিক 
সন্ধান করে রজস্বলা রমনির পরিত্যক্ত ন্যাকড়া 
চৌর্যবৃত্তির প্রকাশিত নোটিশ বোর্ডে 
ধ্রুপদি দুস্যুতার প্রসবিত যন্ত্রণার নষ্ট মুকুল
বনয়ারি সম্মোহনবিদ্যায় নিভে আসে 
চন্দ্রকরোদ্ভাসিত বিকাশের হিল্লোলিত সম্ভাবনা ।
 
অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির নিঃসৃত হরমোনে
ক্রমাগত দৃশ্যমান হয় বিচ্যুতির কলুষিত অঙ্গারিকা 
নিষিদ্ধ নির্বুদ্ধিতা ধনুষ্টঙ্কারের রূপ ধরে 
খেয়ে ফেলে শুভবোধের অপ্রতিবাদী বটবৃক্ষ 
পরমুখাপেক্ষিতার জড়বুদ্ধি কর্বুরিত অলৌকিকতায় 
পরিশুদ্ধির দণ্ডপ্রাপ্ত কনকনে শীতে হারিয়ে যায় ।

কমার্শিয়াল অর্গ্যানের বায়বীয় ভাবনা
         
সুখাচ্ছন্ন সময়ের আলোকসজ্জিত পাণ্ডুলিপি
নপুংসক বিস্ময়করতার ম্যাগনেটিক লাইসিয়াম
দ্রোহার্জিত ইগুয়ানা সরীসৃপের ভয়ংকর আবির্ভাবে 
খসে পড়ে অনিশ্চিত ব্যঞ্জনার অরক্ষিত লিথোগ্রাফি
বিপন্ন শ্রবণশক্তির যন্ত্রণার আর্তস্বরে
একটানা অনুরণিত হতে থাকে 
অমার্জিত বাঁশরিধ্বনির চণ্ডালিক উন্মাদনা ।
 
রোগাক্রান্ত এশিয়ার কাঙালিভোজ বাড়তে থাকে 
তোরণাকৃতি শানবাঁধানো উঠান রক্তাক্ত গালিচা 
আচ্ছাদিত রাজমুকুটে দ্বন্দ্বসমাসের দৌরাত্ম্যিক সিলমোহর
অত্যাচারিত আফ্রিকার রুগ্ন শরীর যেন 
ভুল ব্যাকরণের প্রোলেতারীয় ফটোগ্রাফি
আছড়ে পড়ে দুর্বৃত্তায়নের প্লাবিত ঊর্মিমালা
চক্রাকার অভিসিঞ্চনে মেঘতিমিরের স্নেহবারি নিরুদ্দেশ ।
 
অগোছালো ভাবনার নিরক্ষর বৃত্তাকার স্বাক্ষরগুলো 
আটকে পড়ে লঘুবন্ধনীর অমসৃণ পাকস্থলীতে
কৃষ্ণরঞ্জিত বিশ্বায়নের রাবিশ রয়্যালটি
গড়ে তোলে নষ্টাচারের কমার্শিয়াল অর্গ্যান
জ্বলতে থাকে রসনালোভনের ইলেকট্রিক অগ্নিকুণ্ড 
ইথারে ছড়িয়ে পড়ে স্বরতন্ত্রের ঘূর্ণাবর্ত কম্পন 
শুন্য ডিগ্ৰী ফারেনহাইট তাপমাত্রায় 
পারদে জমে যায় দূর্বিপাকের অশুদ্ধ বায়বীয় ভাবনা ।


অলংকরণঃ তাইফ আদনান