অমানুষ
বাবা
আমার মনের মাঝে
বিড়াল হয়ে শীত আসে।
যখন তখন কুকুর আসে।
একটা দুইটা দুঃখগুলো ভূত হয়ে ফিরে আসে।
সূর্য থেকে সন্ধ্যা নিলা
টেবিল দিলা, পানি দিলা...
এখন দেখি
ফেরেস্তাগুলো খেঁকশিয়ালের হাসি হাসে।
শোকেসে তোলা ড্রিমগুলিতে
বাসী ভাতের ঘ্রাণ আসে।
বাবা
আমার রক্ত মাঝে প্রায় প্রায় সাপ আসে।
আমার আলোর চোখে
বিড়াল ভাসে, কুকুর ভাসে।
জলজ দুঃখ
দুঃখের ব্যাপারে তখনো কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়নি আব্দুল কাদের।
চিনি ছাড়া চায়ে চামচের ঘূর্ণিতে তার চোখটা সীমাবদ্ধ ছিল তখনো ।
ভুল আর জীবন যদি সমার্থক শব্দ হয় তাতে কি ই বা আপত্তি আছে আব্দুলের?
ব্যাকরণ বই কখনও হাতে তো নেয়নি সে।
ছোটলোক জীবনে টাকা তার শ্বাস দীর্ঘ করে না।
আর আমি দেখছিলাম দিনের মাঝামাঝি সময়ে ঘন রোদ কেমনে ছায়া আঁকে।
“রতন ভাইরে আমি কতদিন ধইরা চিনি।
কতদিন চা খাইছে ! বিল নিই নাই।
সে আবার পরে বিল দিয়ে দিছে । যখন খুশি তখন।“
মামা-ভাগ্নে সম্পর্ক বলে কথা।
অথচ ওইদিন ...
ইংলিশ ডিপার্টমেন্টের সুকন্যাকে নিয়ে চা খেতে এসেছিল জিওগ্রাফি ডিপার্টমেন্টের রতন।
নাহ! কই !
খোঁচা খোঁচা দাড়ির , গেঞ্জির উপর গামছা দেয়া মোটা ভাঙ্গা চশমা পড়া আব্দুল কাদের কে তো চেনে না রতন।
সুকন্যাদের নিয়ে আসলে রতনদের খুব গাম্ভীর্য নিয়ে থাকতে হয় বুঝি!
হায়! ধোঁয়ার শহর কি জানে ধান্মুড়ি গ্রামের গাতক আব্দুল কাদের এর এক রাতের বায়না ;
একশত টাকা ছিল বান্ধা?
ব্যাপারী , মহাজনের গদ্গদ গলা স্পর্শ করতো না তার নামের সম্মান!
ডাকতো ওস্তাদ!
চোখের কোণটাই কি কিছু কিছু তরল পদার্থ জমেছে কাদের এর?
সেটাই সামলাতে সামলাতে
আর
বিষাদ পরিবর্তিত স্বর এর উঠানামা ঠিক করতে করতে বলে উঠে
আব্দুল কাদের;
“মামা , দুঃখরা বড় জলজ”।
নিয়ত -কৌতুহল
নিয়তির গল্প বিতৃষ্ণার ।
হাফ গ্লাস পানি খেয়ে ফুল গ্লাস পানির পিপাসা।
শব্দহীন শ্বাসের বিপরীতে শব্দময় শ্বাস !
কাছেই ফ্যানের সুইচ ...খুব কাছেই,
তারপরও ছোট গল্পটা সুইচ অন না করার ।
পরিণতি –ই কি সব?
ফলাফল –ই কি সব বলে দিতে পারে?
হ্যাঁ, প্রচুর আলো দেয় নিয়ন বাতি বটে ,
তারপরও জোনাকির আলোর স্নিগ্ধতা তার নেই ।
প্রচুর পানি রাখে বটে ব্যাটা সমুদ্র ,
অথচ তোমাকে আসতে হবে একটা চাপকলের কাছে ।
নিয়তির এই গল্পকে কি তুমি মিথ্যে গল্প বলবে ?
খবরের কাগজে ছাপা কবিতা বলবে ?
শেষ পেজ না থাকা উপন্যাস বলবে?
আমাকে জানিও ।
আমার যে বড় জানতে ইচ্ছে করে।
অলংকরণঃ আশিকুর রহমান প্লাবন