মনের অসুখ এসে
স্পর্শিত অসুখ,- জীবনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা অতৃপ্ত দর্পণ।
মনে হয় এই বুঝি এলো, সকালের কোমল রোদ্দুরে। উঁকি মারে
দিনের আঁচল অবিরত ফাগুন হাওয়ায়, কোনো রূপ নয়
রূপের কিনারা পার হয়ে-- বাগানের এক কোণে ফুটে থাকে
নিটোল চন্দ্রমল্লিকা, গন্ধের উদ্যানে ভাসে কামিনী কাঞ্চন-- আর
সুন্দরের স্পর্শ পেয়ে বিব্রত ভাঙন এসেই নিঃশব্দে ফোটার আশায়
আহার সারে অবিনাশী আত্মায় প্রতিটি সকাল। এ-যেন কিছুই নয়,
মনের অসুখ এসে অহর্নিশ খেলা করে দূরাগত চুম্বনের জন্মভ্রুণে।
অন্ধ হেমন্তের ভোর
নদীর শরীর ছুঁয়ে উড়ে চলা অন্ধ প্রেম;
না চেনা পৃথিবীর শরীর নিয়েই
বিরহ পাড়ের ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদে,
আগুনের মুখ থেকে উঠে আসা চোখের ভিতর
ফেলে আসা শোকের অতল গহ্বরে
লুকিয়েই থাকে
দুঃখের আঁচল পেড়ে পোড়ার আশায়
ধূসর, শূন্যতার শরীরে।
যেন এক ছিন্নভিন্ন বিভৎস আগুন
পোড়া চোখের জখম ভুলে
উড়ে চলা অন্ধ প্রেম একাকী একাই
নিসর্গ বন্দরে এসে
কেঁপে ওঠে এই সব হেমন্তের
বুকের ভিতর।
কেউ কেউ সব ভুলে যায়
কেউ আবার ভুলপথে স্বপ্ন দেখে মধু-সুধা
স্বর্ণালী সংসার।
কেউ সবুজ সুখের ডালে
বাসা বাঁধে
কেউ মনের ভিতর পুষে রাখে অন্ধ
হেমন্তের ভোর
কেউ অহর্নিশ জ্বলতে থাকে বারোয়ারী জমিনের
দিশাহীন শরীরের অসহ্য জখম নিয়ে
চিতার পোড়াভস্মে, না লেখা অন্ধ প্রেমের
দীর্ঘশ্বাসী বিরহ খাতায়।
সোনারোদ ও আমি
একদিন সোনারোদ আকাশের কোনা ছুঁয়ে ধূর্ত শিয়াল হয়ে চালাকের পালক খুলে রাখে। আমি সেই পালকের করিডোর-আঁচলায় সকালের গন্ধ শুঁকে ফুল হয়ে ফুটি।
অথচ সেই সোনারোদ বেঁকে গিয়ে জীবনের অভিধানে সাপখেলায় মেতে ওঠে শুকতারার সাথে। এদিকে গোলাপ বাগান সোনারোদ খুঁজে চলে জীবনের সাদা করিডোরে। পাপড়িগুলো অচ্ছুত হয়। ধরা পড়ে ঠোঁটকাটা দিদিমণির কালো আর ধূর্ত বিজ্ঞাপনের আগুন জিহ্বায়।
তাই, এখনও খুঁজে চলি সোনারোদের গন্ধ, জীবনের বাঁকা করিডোরে।
অলংকরণঃ তাইফ আদনান